শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন

আপডেট
বিদায় ২০২২ নতুন আশা নিয়েই শুরু হলো ২০২৩ নতুন বছর

বিদায় ২০২২ নতুন আশা নিয়েই শুরু হলো ২০২৩ নতুন বছর

গাজী আক্তার:

রাত পোহালেই পহেলা জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন। ২০২২ বিদায় নিয়ে ২০২৩ সাল আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির যোগ বিয়োগের সমীকরণে ২০২২ সাল কিছু কিছু লোকের কাছে ছিল যন্ত্রণাদায়ক আবার কিছু কিছু লোকের কাছে ছিল অন্য বছরের তুলনায় আনন্দের বছর। ২০২১ সালে মহামারি আমাদেরকে শিখিয়েছে পৃথিবীর বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা।

গেল বছরের সকল দুঃখ-বেদনা ভুলে আজ পহেলা জানুয়ারি বিশ্বের সাথে বাংলাদেশও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন আশা নিয়ে বরণ করবে ২০২৩ সালকে।

২০২০-২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারির ছায়াতেই বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে। নববর্ষ মানেই সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বভাবতই নতুন বছর নিয়ে এবারও মানুষের প্রত্যাশা একটি করোনা মুক্ত বিশ্ব। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, এটাই নতুন ইংরেজি বছরে সবার প্রত্যাশা।

সকালে খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের সূর্যোদয় হলেও শনিবার রাত ১২টায় ঘড়ির কাঁটা শূন্যের ঘর অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গেই গণনা শুরু হয়েছে নতুন বছরের। নতুন বছর মানেই নতুন উদ্দীপনা আর প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে চলা। পেছনে ফেলে আসা ২০২২ সালের ভুল, হতাশা, দুঃখ, গ্লানিকে দূরে ঠেলে দিয়ে নতুন উদ্যমে সাহস নিয়ে পথচলা। ইতিহাস বলে, মানুষের এগিয়ে যাওয়ার এ স্পৃহাই তাকে নিয়ে এসেছে এতদূর। তাই সব অপশক্তি আর বাধা জয় করে নতুন স্বপ্ন বুকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ এগিৃয়ে যাবে।

বাঙালির অগ্রযাত্রার যে ধারা শুরু হয়েছে তাতে ২০২৩ সালে যুক্ত হবে নতুন নতুন মাত্রা। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাবে-এমন প্রত্যাশা দেশের সব মানুষের। গত বছর যে আশা-প্রত্যাশা নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল তার অনেকখানি হয়তো পূরণ হয়নি। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না, নতুন উদ্যম নিয়ে এগিয়ে গেলে সাফল্য আসবেই। এটাই আজকের দিনের প্রত্যয়।

নতুন খ্রিষ্টীয় বছরের আগমন উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে বাংলাদেশের রাজনীতি সবসময় নির্বাচনমুখী। ২০২৪ সালে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ বছরে সেদিক থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকবে। দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছুটা থাকলেও অনেকেই বলছেন এটা অস্বাভাবিক কিছু না।

সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত, লড়াই, সহিংসতা আর কখনো না আসুক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক। নারীর প্রতি আরও মানবিক হোক সমাজ। সমুন্নত থাকুক মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা।

সাধারণ মানুষ নিজেদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চায়। কিন্তু মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি গত বছরও সাধারণ মানুষকে অসহনীয় অবস্থায় ফেলেছে। শীতের এই মৌসুমেও সবজির বাজার বর্তমানে চড়া। দিন আনে দিন খায় মানুষ চায় যেন খেয়ে-পরে বাঁচতে পারেন। নতুন বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হাতের নাগালে না থাকলেও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে-এটাই তাদের প্রত্যাশা। যেসব কালোবাজারি বা চক্র কারসাজি করে সাধারণ মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তোলে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি সাধারণ মানুষের।

শিল্পায়নের জন্য আরও বিনিয়োগবান্ধব অবকাঠামো জরুরি। শিল্প ও উৎপাদন খাতের বিকাশ মানেই নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে এগিয়ে গেছে। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এ বিপ্লবে জয়ী হতে চাই দক্ষ মানবসম্পদ। মেধাবী নতুন প্রজন্মকে এ বিপ্লবে শামিল করতে দরকার তথ্যপ্রযুক্তির আরও আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ-এটা নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা।

‘রোহিঙ্গা’ সমস্যার সমাধান গতবছর কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে আর বাকিগুলো শিগগিরই না হলেও এর স্থায়ী সমাধান কী হবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায়। অন্যদিকে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনগত ঝুঁকিতে থাকা দেশ। তার মধ্যেই নদীদূষণ, দখল, নাব্য হারানো, দেদার পাহাড় কাটা, নির্বিচারে গাছ কাটার মতো ঘটনা ঘটতেই থাকে।

এসব বন্ধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ রয়েছে। সব প্রতিবন্ধকতাকে সামনে রেখেই আজ সবার একটাই প্রার্থনা-শুভ হোক ২০২৩।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |